লড়াই এবার গুরু শিষ‍্যের : নন্দীগ্ৰামের পর হাইভোল্টেজ ফাইট সিঙ্গুরেও

14th March 2021 4:16 pm হুগলী
লড়াই এবার গুরু শিষ‍্যের : নন্দীগ্ৰামের পর হাইভোল্টেজ ফাইট সিঙ্গুরেও


নিজস্ব সংবাদদাতা ( হুগলী ) : বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষনার পরেই বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা র নিরিখে হাইভোল্টেজ ফাইট তালিকায় নাম লেখালো সিঙ্গুর । নন্দীগ্ৰামের পর আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে এবার সিঙ্গুর । লড়াই এখানে গুরু শিষ‍্যের । বিজেপি সিঙ্গুরে প্রার্থী করেছে মাষ্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য কে । এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী বেচারাম মান্না । ভাগ‍্যের পরিহাসে এক শিবিরের দুই মুখ আজ দুজনের প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক ময়দানে । নন্দীগ্ৰাম থেকে যে ঢেউ এর শুরু তা এসে পড়লো সিঙ্গুরেও । 

একসময় রাজ‍্য রাজনীতিতে আলোড়ন তোলা দুই জায়গা সিঙ্গুর ও নন্দীগ্ৰাম । বাম শাসনের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিলো উভয় জায়গার জমি আন্দোলন । ২০১১ সালে তার ফলেই পরিবর্তন আসে রাজ‍্য রাজনীতিতে । বিরোধী দলনেত্রী হয়ে উঠেন রাজ‍্যের মুখ‍্যমন্ত্রী । মাত্র ১০ বছরের মধ‍্যেই আবার পরিবর্তন এর পরিবর্তন হাওয়া ব ইতে শুরু করেছে ‌। আবার ও সেই কেন্দ্রবিন্দু তে নন্দীগ্ৰাম আর সিঙ্গুর । নন্দীগ্ৰামে খোদ তৃণমূল নেত্রীর সাথে লড়াই এ নন্দীগ্ৰাম এর ভূমিপুত্র তথা নন্দীগ্ৰাম আন্দোলনের প্রধান সাথী শুভেন্দু অধিকারী ! আবার সিঙ্গুরে যে মাষ্টারমশাই আর ছাত্রের যুগলবন্দী আন্দোলনে ফসল ঘরে তুলেছিলো তৃণমূল আজ পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে । সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনে প্রবীণ শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ছিলেন প্রধান মুখ ‌ । তার হাত ধরেই উত্থান বেচারাম মান্নার । দল এবার বয়স বেশী কারণ দেখিয়ে মাষ্টারমশাইকে সরিয়ে দিয়েছে ‌ । অভিযোগ , তাঁর সাথে কোনো আলোচনা না করেই বেচারাম মান্নাকে সিঙ্গুরে প্রার্থী করেছে তৃণমূল । এমনকি বেচারাম মান্নার স্ত্রী করবী মান্নাকে অপর বিধানসভা কেন্দ্র হরিপাল থেকে প্রার্থী করেছে । ক্ষোভ প্রকাশ করেই দিন কয়েক আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সিঙ্গুর আন্দোলনের " মাষ্টারমশাই " ! মাষ্টারস্ট্রোক দিল বিজেপি মাষ্টারমশাইকে দাঁড় করিয়েই । এবার লড়াই আরো কঠিনতর চ‍্যালেঞ্জ এর সামনে দাঁড়ালেন তৃণমূল প্রার্থী । " মাষ্টারমশাই আপনি কিছুই দেখননি " বলাও সম্ভব নয় বেচারাম মান্নার পক্ষে । সবকিছু উত্থান পতনের সাক্ষী প্রবীন এই শিক্ষক । তিনি এবার ভোট বাজারে পুরানো দলের বিরুদ্ধে কি বলেন তার দিকেই উৎসাহ বাড়ছে । কোন হাঁড়ির খবর এবার প্রকাশ‍্যে আসে তার দিকেই তাকিয়ে সকলে । রাজনৈতিক মহলের পাশাপাশি পদ্ম শিবির ও উৎসাহিত মাষ্টারমশাই কি করেন দেখার জন‍্য । এই গুরু শিষ‍্যের লড়াই এর প্রেক্ষাপটে সংযুক্ত মোর্চার পাল্লা ভারী হয় কিনা সেটাও দেখার । সিঙ্গুরে জমি আন্দোলন হলেও বর্তমানে জমি আন্দোলন অন‍্য চেহারা নিয়েছে । মমতা বন্দ‍্যোপাধ‍্যায় এর সময়কালে সিঙ্গুরের জমিতে চাষ ও হয়নি , শিল্প ও হয় নি । শিল্প না হবার ফলে চাষীরা যেমন বিপাকে , বিপাকে সিঙ্গুর এলাকার যুব সম্প্রদায় বলে দাবী বামেদের । বিজেপিও সেই এক ই ইস‍্যু নিয়ে মাঠে রয়েছে অনেকদিন থেকেই । এবার নতুন সংযোজন সিঙ্গুর আন্দোলনের অন‍্যতম মুখ রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য পদ্ম শিবিরে । এবার লড়াই কোথায় ? তা সময়ের অপেক্ষা ।





Others News

নিম্মচাপের জেরে অতিবৃষ্টি : হুগলী জেলায় ব‍্যাপক ক্ষতি চাষে

নিম্মচাপের জেরে অতিবৃষ্টি : হুগলী জেলায় ব‍্যাপক ক্ষতি চাষে


সুজিত গৌড় ( হুগলী ) :  নিম্ন চাপের জেরে শনিবার থেকে অকাল বৃষ্টিতে মাথায় হাত চাষীদের।
জেলায় আলু চাষে ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে যাবে কয়েক লক্ষ টাকার উপর বলে দাবি চাষীদের। ধান জমিতে যেমন ক্ষতির পাশাপাশি হুগলী জেলা জুড়ে ব্যাপক ক্ষতি এবার আলু চাষে। চলতি বছরে বার বার নিম্নচাপ  চাপের জেরে যেভাবে ধান চাষ পিছিয়ে ছিল ঠিক আলু চাষও পিছিয়ে ছিল প্রায় পনোর দিন। তবে গত শুক্রবার পযন্ত হুগলী জেলায় প্রায় ৩০ শতাংশ জমিতে বসানো হয়ে গিয়েছিল আলু এবং ৬০ শতাংশ জমি আলু চাষ উপযোগী করে তুলে ছিলেন চাষীরা। ধান চাষের মত আলু চাষের শুরুতে এবার কাল হয়ে উঠলো অকাল বৃষ্টি। অকাল বৃষ্টির ফলে যে সব জমিতে ইতি মধ্যেই আলু বসানো হয়ে গিয়েছিল, সেই সব জমিতে জল জমে থৈ থৈ করছে। ফলে জমিতে বসানো সমস্ত আলু বীজ পচে নষ্ট হতে বসেছে।  কারণ আলু বসানোর পর অন্তত পনেরো থেকে কুড়ি দিন কোনো জলের প্রয়োজন পরে না আলু চাষের ক্ষত্রে।
এ বছর এক বিঘা জমিতে চাষ উপযোগী করে আলু বসানো পযন্ত চাষীদের খরচ পড়েছে প্রায় পনেরো হাজার টাকা অন্যদিকে আলু বসানোর আগে পর্যন্ত  এক বিঘা জমিকে  চাষ উপযোগী করে তুলতে খরচ পড়েছে প্রায় সাত হাজার টাকা। অর্থাৎ ইতি মধ্যে নিম্ন চাপের জেরে অকাল বর্ষণে হুগলী জেলার ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছে লক্ষ  লক্ষ টাকার উপর। জেলায় আলু চাষের জমির পরিমান ৯০ হাজার হেক্টর জমি। সেমবার সকাল থেকেই  আলু জমি থেকে জল বের করে আলু বীজ বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা করছেন চাষীরা। চাষীদের দাবি অকাল বর্ষণে একেবারে সর্বস্বান্ত  হয়ে পড়েছে। আবার নতুন করে আলু বসানো বা জমি তৈরি করে আবার আলু বসানো অনেকের পক্ষেই আর সম্ভব হবে না।
অন্যদিকে আবহাওয়া উপযোগী হলে পুনরায় জমি আলু চাষের উপযোগী করে আলু বসাতে সময় লাগতে পারে পনেরো থেকে কুড়ি দিন। ফলে আলু চাষে ফলন যেমন কমবে খাবার আলুর জোগানেও পড়বে টান। আগামী দিনে ধানের ক্ষতির ফলে যেমন  চালের যোগান টান পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।  ঠিক তেমনি আগামী দিনে খাবার আলুর জোগানেও টান পড়বে বলে মত চাষীদের।